লোগো ডিজাইন কি? লোগো ডিজাইন করে কিভাবে আয় করা যায়?

what is logo design

আমাদের দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা বেকারত্ব। দিন দিন বেকারের সমস্যা ব্যাপক পরিসরে বাড়ছে, বর্তমানে অনেক শিক্ষিত বেকার দেশে জব খোঁজার পাশাপাশি ডিজিটাল কোন একটি বিষয়ে স্কিল গ্রো করে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ইনকাম করার চেষ্টা করছে। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে যে সকল বিষয়ের চাহিদা তুঙ্গে রয়েছে তার মাঝে লোগো ডিজাইন অন্যতম। আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব লোগো ডিজাইন কি, লোগো ডিজাইন করে কিভাবে আয় করা যায়, Logo ডিজাইনে কোন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় বা সহজভাবে বলতে গেলে লোগো ডিজাইনের আদ্যপান্ত।

লোগো কি? 

লোগো বলতে আমরা বুঝি, একটি বিশেষ ধরনের প্রতীক বা ডিজাইনকে যা কোন একটি ব্র্যান্ডকে রিপ্রেজেন্ট করে। এতে থাকা ফটো ও ডিজাইন পুরো ব্রান্ডটিকে ফুটিয়ে তোলে, এমনকি এই ডিজাইনটি বারবার আমাদেরকে ব্রান্ডটির কথা মনে করিয়ে দেয়। পৃথিবীর বড় বড় কোম্পানিরা তাদের লোগো ডিজাইনের জন্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে।  সম্প্রতি ক্যাডবেরি তাদের লোগো ডিজাইন করার জন্য প্রায় ১ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এ থেকেই বোঝা যায় একটা কোম্পানির জন্য, লোগো তাদের মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। 

লোগো কত প্রকার ও কি কি?

লোগো কত প্রকার ও কি কি

লোগো আকার আকৃতি ও ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে লোগো কে মোট ৯টি ভাগে ভাগ করা হয়। আমরা অনলাইনে যে লোগো গুলো দেখতে পাই সেগুলো এই ৯ প্রকারেরই অন্তর্ভুক্ত। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ওয়ার্ড মার্ক লোগো, লেটার মার্ক লোগো, কম্বিনেশন মার্ক লোগো, লেটারফর্মস লোগো, ও মাসকট লোগো ইত্যাদি।

১. ওয়ার্ড মার্ক লোগো

এই লোগো গুলোকে লোগো-টাইপো বলে ডাকা হয়। এই লোগো গুলো প্রধানত টাইপোগ্রাফির উপর নির্ভরশীল। এই টাইপোগ্রাফির মাঝেই ব্রান্ডের নাম উল্লেখ করা থাকে। বিভিন্ন সময় ও চাহিদা অনুযায়ী, এই ধরনের লোগোতে প্রয়োজনভেদে টাইপোগ্রাফির স্টাইল, ডিজাইন ও রং পরিবর্তন করা হতে পারে। যেমনঃ  কোকাকোলা Coca Cola, গুগোল Google, ইবে EBay ইত্যাদি

২.লেটার মার্ক লোগো

লেটার মার্ক লোগোকে মনোগ্রাম লোগো বলেও ডাকা হয়। লেটার মার্ক লোগোতে কোন প্রতিষ্ঠানের আদ্যক্ষর বা সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করা হয় যেমন BBC বিবিসি, CNN  সিএনএন, HBO এইচবিও। 

৩.কম্বিনেশন মার্ক লোগো

এই ধরনের লোগোতে টাইপোগ্রাফি ও ডিজাইন উভয়ই ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের লোগোতে কোন নির্দিষ্ট গঠনতন্ত্র মেনে চলা হয় না,  ক্লায়েন্টদের ইচ্ছা অনুসারে লোগো ডিজাইন করা হয়। যেমন Burger King বার্গার কিং,Pizza Hut পিজা হাট ইত্যাদি। 

৪. ব্রান্ড মার্ক লোগো

কাউকে যদি বলা হয় অ্যাপেল কোম্পানির কথা তাহলে তার মাথায় সবার আগে যে চিত্রটি আসে সেটি হচ্ছে একটি কামড়ানো আপেলের। কেউ একটু ভাবলেই বুঝতে পারবে অ্যাপেল কোম্পানি তাদের লোগোতে একটি কামড়ানো আপেলের ছবির এমন ভাবে ব্র্যান্ডিং করেছে, যে কেউ অ্যাপেল কোম্পানির কথা ভাবলেই তার মাথায় কামড়ানো আপেলের ছবি ফুটে উঠবে এটিই ব্রান্ড মার্ক লোগোর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এই ধরনের লোগোতে ব্র্যান্ডের সিম্বলগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। 

৫। লেটারফর্মস লোগো

লেটারফর্মস লোগো হল এক ধরনের লোগো যা শুধুমাত্র একটি অক্ষর দিয়ে তৈরি। এই অক্ষরটি সাধারণত কোম্পানির নামের প্রথম অক্ষর হয়ে থাকে। লেটারফর্মস লোগোগুলি  দেখতে খুব সাধারণ মনে হয় এবং মনে রাখা সহজ। লেটারফর্মস লোগো গুলো   বিভিন্ন প্রকারের রং ও শৈল্পিক শৈলীতে  তৈরি করা হয়ে থাকে যা যেকোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত। লেটারফর্মস লোগোগুলির কয়েকটি উদাহরণ  হচ্ছে, Google: একটি “g” অক্ষর যা একটি গ্রাফিক শৈলীতে ডিজাইন করা হয়েছে । BMW: একটি ‘B’ সাদা বর্গক্ষেত্রের মধ্যে নীল এবং সাদা রঙের একটি বৃত্তাকার চিহ্ন।

৬। এমব্লেম লোগো

এমব্লেম লোগো  হচ্ছে এক ধরনের লোগো  যেখানে একটি চিত্রের মধ্যে টেক্সট  বসিয়ে তৈরি করা হয়। এই চিত্রটি সাধারণত একটি আকৃতি, প্রতীক বা চিহ্ন  হয়ে থাকে। এমব্লেম লোগোগুলি  সাধারণত একটি  নির্দিষ্ট Tradition বা ঐতিহ্যকে তুলে ধরে এবং লোগোর মাঝে আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলে। এমব্লেম লোগোগুলির কয়েকটি উদাহরণ হল: Starbucks: একটি বৃত্তাকার শিল্ডে একটি গ্রীক দেবীর চিত্র, PSJ:  একটি নীল কালারের বৃত্তের মাঝে আইফেল টাওয়ারের  ছবি।

৭। অ্যাবস্ট্রাক্ট লোগো

অ্যাবস্ট্রাক্ট লোগো অন্যান্য লোগোর  তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্ন, এখানে সুনির্দিষ্ট কোন ছবি বা গ্রাফিকেল  ডিজাইন ব্যবহার করা হয় না। সাধারণত জ্যামিতিক আকার, রঙ, বা লাইনের সংমিশ্রণে যে ধরনের লোগো তৈরি করা হয় তাকে অ্যাবস্ট্রাক্ট লোগো বলে। অ্যাবস্ট্রাক্ট লোগো  সাধারণত জ্যামিতিক  নকশার উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট একটি ধারণা বা অনুভূতি ফুটিয়ে তোলে। অ্যাবস্ট্রাক্ট লোগোর কয়েকটি উদাহরণ হল:  Mastercard:  দুইটি গোলাকার উজ্জ্বল লাল ও হলুদ কালারের বৃত্ত। Spotify:  একটি হালকা সবুজ কালারের ভেতর মাঝে তিনটি রেখার দাগ।

৮। মাসকট লোগো

মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণীর ছবি ব্যবহার করে যে লোগো তৈরি করা হয় তাকে  মাসকট লোগো বলে।  এ ধরনের লোগো একটি সুন্দর এবং কাল্পনিক চিন্তা ভাবনা লোগোর মাঝে ফুটিয়ে তুলে।  মাস্কট লোগো গুলো দেখতে অনেক প্রাণবন্ত এবং আকর্ষণীয় মনে হয়। 

মাসকট লোগো বিভিন্ন ধরণের ব্যবসার জন্য উপযুক্ত  হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, একটি শিশুদের খেলনা কোম্পানির জন্য একটি প্রাণবন্ত এবং আকর্ষণীয় চেহারা তৈরি করতে একটি মাসকট লোগো ব্যবহার করা হয়।  বিভিন্ন ক্রীড়া দল তার খেলোয়াড়দের প্রতিনিধিত্ব করতে একটি মাসকট লোগো ব্যবহার করা হয়।  তাছাড়া বিভিন্ন ফার্ম  তাদের পণ্য বা পরিষেবার গুণমানকে প্রতিফলিত করতে মাসকট লোগো ব্যবহার করে থাকে।

মাসকট লোগোর কয়েকটি উদাহরণ হল: NBA এর লোগো: NBA এর একজন খেলোয়াড় লেব্রন জেমসের চিত্র যা NBA এর সাথে যুক্ত। KFC এর লোগো : এখানে KFC  এর প্রতিষ্ঠাতার ছবি ব্যবহার করে এই মাসকট লোগোটি তৈরি করা হয়েছে।

৯। সিম্বলিক লোগো

সিম্বলিক লোগো হল এমন একটি লোগো যা একটি বাস্তব ধারণার  উপর  ভিত্তি করে একটি চিত্র ব্যবহার করে  তৈরি করা হয়। এই চিত্রটি সাধারণত একটি চিহ্ন, প্রতীক বা আইকন যে কোন কিছু হতে পারে। সিম্বলিক লোগোগুলি প্রায়ই একটি নির্দিষ্ট ধারণা বা অনুভূতি প্রকাশ করতে  ডিজাইন করা হয়।

সিম্বলিক লোগোর কয়েকটি উদাহরণ হল: Toyota: এর লোগোতে সিম্বলিক ভাবে Toyota শব্দটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। Fedex:  এর লগোতে  সিম্বলিক ভাবে  স্পিড কে বোঝানো হয়েছে।

কিভাবে লোগো ডিজাইন করতে হয়? 

কিভাবে লোগো ডিজাইন করতে হয়

একটি সুন্দর লোগো ডিজাইন করার জন্য কি কি বিষয় মাথায় রেখে ডিজাইন করতে হয় তা জানা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বেশ কিছু স্টেপ ফলো করে খুব সহজেই একজন প্রফেশনাল লোগো ডিজাইনারের মত করে লোগো তৈরি করা যায়। নিচে বেশ কিছু স্টেপ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো যা আমাদের প্রফেশনাল ডিজাইনার হতে সাহায্য করবেঃ

১। স্টাইল

লোগো ডিজাইন করার সর্বপ্রথম স্টেপ হল স্টাইল নির্ধারণ করা। অনেকেই লোগো তো শুধু মাত্র ফটো বা ডিজাইন ব্যবহার করে থাকে আবার অনেকেই তাদের লোগোর ডিজাইনে লেখাও রাখতে চায়। তাই লোগো ডিজাইন করতে হলে সর্বপ্রথম আপনার ক্লায়েন্টের চাহিদা সম্পর্কে জানতে হবে, তিনি কি শুধু ডিজাইন চান নাকি ডিজাইনের সাথে ব্র্যান্ডিং বা লেখাও চান। এরপর স্টাইল সম্পর্কে আরো ধারণা বৃদ্ধির জন্য গুগলে সার্চ দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের লোগোর ডিজাইন দেখতে পারেন। 

২। ফন্ট

লোগোর স্টাইল ঠিক করার পর আপনাকে লোগোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ফন্ট সিলেক্ট করতে হবে। একটি লোগোকে প্রফেশনালি রিপ্রেজেন্ট করার জন্য ফন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ডিজাইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি লোগো ডিজাইন ফন্ট সিলেক্ট করে লোগোর উপযুক্ত স্থানে বসাতে হবে। আপনার ডিজাইন করা লোগোটিতে ফন্ট ব্যবহার নিয়ে যদি দ্বিধায় থাকেন তাহলে আপনার ডিজাইন কৃত ব্রান্ডের কম্পিটেটরদের লোগো চেক করে ফন্ট ব্যাবহার করতে পারেন।

৩। কালার

কালার সিলেকশন করা লোগো ডিজাইনের সবচেয়ে সূক্ষ্ম ও কঠিন কাজ। সুন্দর কালার পুরো লোগোটিতে প্রফেশনালিজম ফুটিয়ে তোলে, আবার কালার সিলেকশনে একটু ভুল হলে পুরো লোগোটি তার স্বতন্ত্রতা হারায়। তাই অনেক ভেবেচিন্তে লোগোর জন্য সঠিক কালারটি নির্ধারণ করতে হবে।

লোগো ডিজাইন করার ৫টি মৌলিক ধাপ

লোগো হল একটি ব্যবসা, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের  জন্য একটি চিহ্ন বা প্রতীক যা সেই সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে সনাক্ত করতে  ব্যবহার করা হয়। একটি ভালমানের লোগো সহজে মনে রাখা যায় এবং আপনার ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়  তুলে ধরতে সাহায্য করে। নিম্নে আমরা লোগো ডিজাইন সম্পর্কিত পাঁচটি মৌলিক ধাপ তুলে ধরছি-

১। আপনার ব্র্যান্ডের পরিচয় তুলে ধরুন

লোগো ডিজাইন করার প্রথম ধাপটি হলো আপনার ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় লোগোর ভিতর ফুটিয়ে তোলা। আপনার ব্র্যান্ডের মূল্যবোধ কী? আপনি লোগোর মাধ্যমে কোন ধরনের মেসেজ পাঠাতে চান? আপনার ব্র্যান্ডের লক্ষ্য  অডিয়েন্স কে? এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়ে, আপনি আপনার লোগো ডিজাইনের জন্য একটি  প্রাথমিক কনসেপ্ট তৈরি করতে পারেন।

২। আইডিয়া খুঁজে বের করুন

একবার আপনি আপনার ব্র্যান্ডের পরিচয় সম্পর্কে একটি ধারণা পেয়ে গেলে, আপনি আইডিয়া খুঁজতে শুরু করতে পারেন। আপনি বিভিন্ন ডিজাইন  স্যাম্পল দেখতে পারেন, বা আপনি আপনার নিজের ধারণাগুলির মাধ্যমে স্যাম্পল তৈরি করতে পারেন।  তবে সব সময় মনে রাখবেন যে আপনার লোগো যেন সহজেই মনে রাখা যায়।

৩। লোগোর স্টাইল নির্ধারণ করুন

আপনি যদি ইতিমধ্যে আপনার লোগো সম্পর্কে আইডিয়া খুঁজে বের করতে সক্ষম হন,  এখন আপনার প্রধান কাজ হচ্ছে লোগো স্টাইল বা ধরন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া। লোগো স্টাইল বলতে  লোগোর প্রকার কে বোঝানো হয়েছে।  অর্থাৎ  আপনার লোগোটি কি একটি ছবি,  ট্রাইপোগ্রাফিক্স লোগো ডিজাইন,  বা এ দুটির সংমিশ্রণে তৈরি হবে  কিনা, এ ব্যাপারে আপনাকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।  তাছাড়া কি ধরনের রং ব্যবহার করবেন তার একটি তালিকা তৈরি করতে হবে।  তবে মাথায় রাখতে হবে যে আপনার ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় যেন লোগোর মাঝে ফুটে ওঠে।

৪। লোগো ডিজাইন শুরু করুন

আপনি যদি একজন ডিজাইনার  হয়ে থাকেন এখন আপনার কাজ হচ্ছে ডিজাইন শুরু করা।  প্রথমদিকে  আপনার তৈরি লোগো সুন্দর না হলেও আস্তে আস্তে আপনার কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি হতে থাকবে।  তখন দেখবেন আপনি ভালো মানের লোগো তৈরি করতে পারছেন।  তাছাড়া উপরের তিনটি ধাপ থেকে ধারণা নিয়ে আপনি যেকোনো একটি ব্র্যান্ডের লোগো তৈরি করতে পারবেন। 

৫। লোগো পরিমার্জন করুন

প্রাথমিকভাবে একটি লোগো তৈরি করার পর এদিকে অনেকভাবে পরীক্ষা করতে হবে। যেমন বিভিন্ন রংয়ের সংমিশ্রণ করে পরীক্ষা করতে হবে দেখুন  কোন কালারের রঙে  লোগোটি সুন্দর লাগছে এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচয় ভালোভাবে তুলে ধরতে পারছে। তাছাড়া আপনি আপনার  কাছের মানুষজনের কাছ থেকে লোগোটি সম্পর্কে মতামত চাইতে পারেন। অনেকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর আপনার লোগোটি আবার পরিমার্জন  করা লাগতে পারে।  এরপর আপনি  আপনার কাঙ্খিত লোগোটি প্রকাশ করতে পারেন। 

লোগো ডিজাইন একটি সৃজনশীল  কাজ, এটি  তৈরি করার জন্য কিছু পরিকল্পনা এবং  রিসার্চ প্রয়োজন। উপরের পাঁচটি  মৌলিক  ধাপগুলি অনুসরণ করে, আপনি একটি  ভালো মানের লোগো তৈরি করতে পারেন যা আপনার  ব্র্যান্ডের পরিচয় সঠিকভাবে  তুলে ধরবে।

লোগো তৈরির সফটওয়্যার

একটি প্রফেশনাল লোগো তৈরি করার প্রধান হাতিয়ার একটি ভালো লোগো ডিজাইন সফটওয়্যার। একটি Logo Design সফটওয়্যারের মাধ্যমে, আপনি সাধারণ একটি লোগোকে অসাধারণ লোগোতে রূপান্তরিত করতে পারবেন। বর্তমান সময়ের সবথেকে জনপ্রিয় সফটওয়্যারটি হল Adobe Illustrator, এর মাধ্যমে যে কোন ধরনের লোগো তৈরি করা সম্ভব। তাছাড়া এ সময়ের জনপ্রিয় কয়েকটি লোগো ডিজাইনিং সফটওয়্যার হচ্ছে-

  • এডোবি ইলাস্ট্রেটর (Adobe Illustrator)
  • এডোবি ফটোশপ (Adobe Photoshop)
  • কোরেলড্র (CorelDRAW)
  • লুকা (Looka)
  • গ্র্যাভিট ডিজাইনার (Gravit Designer)
  • হ্যাচফুল (Hatchful)
  • ইংকস্কেপ (Inkscape)
  • ক্যানভা (Canva) 
  • অ্যাফিনিটি ডিজাইনার (Affinity Designer) ইত্যাদি।

এছাড়াও আরো অনেক সফটওয়্যার রয়েছে যা ব্যবহার করে আমরা প্রফেশনাল Logo Design করতে পারি। 

লোগো ডিজাইন করে আয় করার উপায়

কথায় আছে স্কিল কখনো ফেলনা যায় না। আপনি যদি একজন এক্সপার্ট লোগো ডিজাইনার হন তাহলে আপনার আশেপাশে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটু খুঁজলেই দেখতে পাবেন, অনেকেই তাদের কাজের জন্য প্রফেশনাল Logo Designer খুঁজছে। এছাড়াও অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস তো রয়েছেই। ইদানিংকালে দেশি-বিদেশি অনেক কোম্পানিতে রিমোটলি কাজ করার সুযোগ বাড়ছে।  অনেক বড় বড় বিদেশি কোম্পানি রিমোটলি কাজ করার মতো এমপ্লয়ি খুঁজছে। তাই আপনি আল্লাহর উপর ভরসা করে চেষ্টা করতে থাকুন ইনশাআল্লাহ কাজ পাবেন, হতাশ হবেন না।

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজের জন্য কিছু মার্কেটপ্লেস

  • ফাইভার.কম(Fiverr.com)
  • ফ্রিল্যান্সার.কম(Freelancer.com)
  • পিপলপারআওয়ার.কম(PeoplePerHour.com)
  • আপওয়ার্ক.কম(Upwork.com)
  • গুরু.কম (Guru.com) ইত্যাদি।

রিমোটলি জবের জন্য

  • যিপ রিক্রুটার(ziprecruiter.com)  
  • We work remotely (weworkremotely.com)

লোগো ডিজাইন শিখবেন কিভাবে?

লোগো ডিজাইন শিখবেন কিভাবে

লোগো ডিজাইন প্রধানত আপনি দুইভাবে শিখতে পারেন যথাক্রমেঃ

  • অনলাইন কোর্স করে ও
  • অফলাইন কোর্স করে। 

অনলাইনঃ অনলাইনে Logo Design শেখা তুলনামূলক সহজ এবং এই শিখন প্রক্রিয়ায় ব্যয় কম। অনলাইনে শিখতে গেলে বেশ কয়েকটি প্রসেস ফলো করতে পারেন যেমনঃ 

পেইড কোর্সঃ যদিও পেইড কোর্স করা কিছুটা ব্যয়বহুল, তবে এটি অনেক ইফেক্টিভ। পেইড কোর্সে সরাসরি একজন মেন্টরের হেল্প পাওয়া যায় ফলে আপনার স্কিল শেখার জার্নিটা বহুলাংশেই সহজ হয়ে যায়। 

ইউটিউব ভিডিওঃ আপনি ইউটিউবে টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখে ঘরে বসেই Logo Design শিখতে পারেন তবে এই শিখন প্রক্রিয়াটা তুলনামূলক সময় সাপেক্ষ হবে। ফ্রি ভিডিও দেখে লোগো ডিজাইন শেখা যায় কিন্তু এক্সপার্ট হওয়ার জন্য একজন মেন্টরের তত্ত্বাবধানে থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। 

অফলাইনঃ অফলাইনে লোগো ডিজাইন শিখতে হলে আপনাকে কোন একটি আইটি ইনস্টিটিউটের আন্ডারে Logo Design কোর্স করতে হবে। অফলাইনে যদিও তুলনামূলক অর্থের ব্যয় বেশি হয়, তবে হাতে-কলমে শেখা যায় বলে এই শিখন প্রক্রিয়া ক্যারিয়ার গঠনে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

শেষ কথা

লোগো ডিজাইন কি, কিভাবে আমরা Logo Design করব, লোগো ডিজাইন করে কিভাবে আয় করা যায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা এই পোস্টে বিস্তারিত জেনেছি। বর্তমানে পুরো পৃথিবীতে লোগো ডিজাইনারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই আপনিও যদি লোগো ডিজাইনিং শিখতে চান , তাহলে আজ থেকেই উঠে পড়ে লাগুন এবং এই পোস্টে দেখানো গাইডলাইন মেনে Logo Design শিখুন এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ করুন।  ইনশাআল্লাহ লেগে থাকলে সফলতা আপনার ললাট চুম্বন করতেও পারে। 

এই ওয়েবসাইটের সকল কন্টেন্ট (ছবি, লেখা ইত্যাদি) অন্য কোথাও কপি করে বা পরিবর্তন করে পাবলিশ করার আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। যদি কেউ এমন অপরাধমূলক কাজ করেন তাহলে DMCA পাঠানো সহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।



Leave a Reply