ভিডিও মার্কেটিং (Video Marketing) হল ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ যেখানে ভিডিও ব্যবহার করে পণ্যের প্রচার করা হয়। এটি একটি কার্যকারি মার্কেটিং পদ্ধতি যা ব্যবহারকারীদের নিকট পণ্য বা সেবা প্রচার করার জন্য ব্যবহৃত হয়। আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ভিডিও দেখে থাকি যেমন টিউটোরিয়াল ভিডিও, প্রমোশনাল ভিডিও, প্রোডাক্ট রিভিউ ভিডিও ইত্যাদি যা এ ধরনের মার্কেটিং এর অংশ। ভিডিও মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের পণ্য বা সেবার গুনাগুন সম্পর্কে জানানো হয় এবং তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়।
Table of Contents
ভিডিও মার্কেটিং কি ?
ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে আগ্রহ থাকলে, আমার ধারণা আপনি ভিডিও মার্কেটিং সম্পর্কেও শুনে থাকবেন। ভিডিও মার্কেটিং হচ্ছে ভিডিও এর মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সেবাকে অডিয়েন্স পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার একটি প্রক্রিয়া। মার্কেটিংয়ের বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়াকে একত্রিত করে ভিডিও মার্কেটিংয়ের কাজ করা হয়। বর্তমানে ইউটিউব, ফেসবুক, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাটের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোতে ভিডিও মার্কেটিংয়ের সাহায্যে বিভিন্ন প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসকে প্রমোট করা হয়। তবে এখানে খেয়াল রাখতে হবে আপনার করা ভিডিওটি যেন ইসলামিক শরীয়া মানদণ্ডে হালাল হয়। ভিডিওতে এমন কিছু রাখা যাবে না যেখানে নাজায়েজ উপকরণ রয়েছে।
ভিডিও মার্কেটিং এর প্রকারভেদ
ভিডিও মার্কেটিং (Video Marketing) এর অনেকগুলো প্রকার আছে তার মাঝে অন্যতম হচ্ছে,
১। বিজ্ঞাপন ভিডিও: বিজ্ঞাপন ভিডিও হলো একটি ভিডিও মার্কেটিং পদ্ধতি যা পণ্য, সেবা, বা ব্র্যান্ড এর প্রচার প্রচারণার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ভিডিওগুলি দর্শকের মাঝে ব্র্যান্ড এর পণ্য বা সেবা সমূহকে ভালোভাবে তুলে ধরে এবং গ্রাহকদের তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে।
২। কর্পোরেট ভিডিও: কর্পোরেট ভিডিও কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় তুলে ধারার উদ্দেশ্য তৈরি করা হয়। এই ভিডিওগুলি কোম্পানির মূল লক্ষ্য, কর্মকাণ্ড, অর্জনকৃত সাফল্য সুন্দর করে তুলে ধরে মানুষদের সাথে সুসম্পক গড়ে তোলে।
৩। টিউটোরিয়াল ভিডিও: টিউটোরিয়াল ভিডিও কোনও বিষয়ে কৌশল, দক্ষতা বা প্রক্রিয়া শিখানোর জন্য তৈরি হয়। এই ভিডিওগুলি প্রায় সমস্যার সমাধান, উদাহরণ ব্যবহার এবং কার্যপ্রণালীর বিবরণ দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
৪।) পণ্য বা পরিষেবার ডেমো ভিডিও: এই ভিডিওগুলি পণ্যের বৈশিষ্ট্য, ব্যবহার পদ্ধতি এবং পরিচর্যার সম্পর্কে দর্শকের বুঝিয়ে দেয় এবং তারা পণ্য কেনার জন্য আকর্ষণ সৃষ্টি করে। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন শপগুলোতে আমারা এ ধরনের ভিডিও দেখতে পায়।
এখানে ভিডিও মার্কেটিং এর কয়েকটি প্রকার উল্লেখ্য করা হলেও, ভিডিও মার্কেটিং (Video Marketing) আরো অনেক প্রকার রয়েছ যা ব্যাক্তি, বা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে বানানো হয়ে থাকে।
ভিডিও মার্কেটিং কেন করবেন ?
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে ভিডিও মার্কেটিং কিছুটা এগিয়ে রয়েছে এবং এর বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। ভিডিও মার্কেটিং দ্বারা আপনি আপনার লক্ষ্যবস্তুকে গ্রাহকদের সামনে তুলে ধরতে পারেন এতে আপনার ব্র্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি পাবে। ভিডিও মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রমোশন বা বিপণন বৃদ্ধি করতে পারেন। তাছড়াও ভিডিও মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ড তাদের কাস্টমারদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে এবং প্রতিষ্ঠানের লক্ষ অর্জন করতে সাহায্য করে।
ভিডিও মার্কেটিং কোথায় করবেন ?
বর্তমানে যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া গুলো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সেগুলো দিন দিন একটি ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্মে পরিণত হচ্ছে। ইউটিউব, ও টিকটক এর মত প্ল্যাটফর্ম গুলো শুধুমাত্র ভিডিও কনটেন্ট নিয়ে কাজ করে। কিন্তু আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম গুলো এখন ভিডিও কনটেন্ট এর প্রতি অনেক বেশি জোর দিচ্ছে। ফেসবুকের রিলস অপশনটি আনাই হয়েছে ভিডিও কে টার্গেট করে। তাই আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য ভিডিও মার্কেটিং কৌশল গ্রহণ করেন তাহলে এই মুহূর্তে আপনার সামনে অনেকগুলো জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম আছে।
আশা করাই যায় অদূর ভবিষ্যতে আরো বেশ কিছু ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম আমাদের সামনে চলে আসবে যেগুলো ভিডিও মার্কেটিংয়ের চাহিদা আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিবে। তখন হয়ত বর্তমান সময়ের থেকেও বেশী চাহিদা থাকবে ভিডিও মার্কেটিং এর, তাছাড়াও ভিডিও মার্কেটিং করে আপনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস গুলোতে ফ্রীল্যান্সিং করে ভালো পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারবেন।
ভিডিও মার্কেটিং (Video Marketing) কেন গুরুত্বপূর্ণ ?
সাধারণ মার্কেটিং এর তুলনায় ভিডিও মার্কেটিং এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবার গুণা গুন খুব সহজে তুলে ধরা যায়। এতে করে কাস্টমাররা ভিডিওর মাধ্যমে পণ্যের ব্যবহার বিধি দেখতে পারে ফলে পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে দ্বিধাদন্দ কমে যায়। তাছড়া টেকনোলজির সহজলভ্যতার জন্য ভিডিও তৈরির কাজ খুব সহজ হয়ে গেছে। এখন হাতে থাকা ছোট স্মার্ট ফোন দিয়ে খুব সহজে ভিডিও তৈরি করে আপনি ভিডিও মার্কেটিংয়ের কাজ শুরু করতে পারবেন। মানুষ এখন বেশিরভাগ অলস সময় ভিডিও দেখে পার করে। তাই আপনি যদি আপনার পণ্য বা সার্ভিস এর জন্য ভিডিও তৈরি করে মার্কেটিং করতে পারেন তাহলে সেটি অনেক ফলপ্রসূ হবে।
উপরের চার্টটিতে প্রতি সপ্তাহে একজন মানুষের এভারেজ ভিডিও দেখার সময় তুলে ধরা হয়েছে। আপনি যদি ২০২২ এর দিকে লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন একজন মানুষ ঘরে প্রতি সপ্তাহে ১৯ ঘন্টা ভিডিও দেখার পেছনে ব্যয় করেছে। প্রতিবছর এর পরিমাণ আনুপাতিক হারে বাড়ছে। তাই এই সময়ে এসে মার্কেটিংয়ের জন্য ভিডিও মার্কেটিং সবচাইতে উপযুক্ত মাধ্যম আর এটাকে এড়িয়ে চলার কোনো সুযোগ নেই। আর অধিকাংশ মানুষ যেখানে হারাম ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করার পেছনে ছুটছে তখন আপনি যদি হালাল ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন তাহলে অবশ্যই সেটি অনেক মানুষকে পাপ কাজ থেকে দূরে সরিয়ে রাখবে।
ভিডিও মার্কেটিং এর সুবিধা
বর্তমান সময়ে অন্যনা মার্কেটিং এর তুলনায় ভিডিও মার্কেটিং ব্যাপক সারা জাগিয়েছে। অন্যনা মার্কেটিং এর তুলনায় ভিডিও মার্কেটিং খুব সহজ বলে নামি দামি কোম্পানিগুলো এই পদ্ধিতেকে বেছে নিয়েছে। তাছাড়াও ভিডিও মার্কেটিং এর বেশ কিছু সুবিধা রয়েছ যেমন-
সবচেয়ে দ্রুত গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো যায়
বর্তমান সময়ে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাদের প্রায় সকলেই কোনো না কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এর সাথে যুক্ত আছেন। মানুষের হাতে হাতে স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা কারণে ভিডিও দেখার পরিমাণ বহুগুণে বেড়েছে। তাই আপনার মার্কেটিংয়ের কৌশল যদি হয় ভিডিও, আর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বেছে নেন বিভিন্ন সোশ্যাল সাইট তাহলে সবচাইতে দ্রুত সময়ে আপনি টার্গেটেড অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছে যেতে পারবেন।
গ্রাহকের সাথে সম্পর্ক বাড়ানো যায়
মার্কেটিং করার জন্য ভিডিও অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি মাধ্যম। হাতে হাতে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধাসহ ডিভাইস থাকায় মানুষ এখন প্রচুর ভিডিও কনটেন্ট দেখে। এজন্য আকর্ষণীয় ও তথ্যপূর্ণ ভিডিও কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে আপনি আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স এর মনোযোগ আকর্ষণ করতে এবং ধরে রাখতে পারবেন। এভাবে ভিডিও এর মাধ্যমে আপনি আপনার অডিয়েন্সকে ওয়েবসাইট অথবা সোশ্যাল মিডিয়া পেইজে দীর্ঘ সময় ধরে রাখতে পারবেন। এতে করে আপনার ব্যান্ডের পরিচিতি বাড়বে।
SEO তে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে
গুগল ট্রেন্ডস যে সকল কন্টেন্টে ভিডিও যুক্ত থাকে সেগুলো কে সার্চ রেজাল্টে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। যার মাধ্যমে ওয়েব সাইট অথবা সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেক বেশি ট্রাফিক পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভিডিওই সবচাইতে বেশী জনপ্রিয় কনটেন্ট, তাই আপনার কনটেন্ট যদি ভিডিও হয় সে ক্ষেত্রে লাইক কমেন্ট শেয়ার পাওয়ার সংখ্যা বেড়ে যাবে বহুগুণ। মানুষ আজকাল কন্টেন্ট অনেক সময় নিয়ে পরার চাইতে ভিডিও দেখতে পছন্দ করে বেশি।
সর্বোচ্চ কনভার্শন রেট
একটি ভিডিও কনটেন্ট, টেক্সট বা ইমেজ কনটেন্ট এর চাইতে অনেক গুন বেশী কার্যকরী ভাবে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করতে পারে। ভিডিও থেকে দর্শকদেরকে পণ্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিয়ে পণ্য বা সেবা গ্রহণে উৎসাহিত করা যায়। পাশাপাশি ভিডিওতে বিভিন্ন ধরনের কল টু অ্যাকশন যুক্ত করে ট্রাফিককে বিভিন্ন দিকে ড্রাইভ করা যায়।
ব্র্যান্ড সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেয়া যায়
ভিডিও মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকের সামনে আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে যেকোনো তথ্য সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারবেন। এতে গ্রাহক আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা পাবে। ভিডিও মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহককে আপনার ব্র্যান্ডের কার্যক্রম স্বচক্ষে দেখিয়ে দেয়া সম্ভব।
খেয়াল রাখবেন, আপনার ভিডিওর মধ্যে যেন ব্র্যান্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি শক্তিশালী মেসেজ থাকে। এতে গ্রাহকের মনে আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হবে। আর এটা আস্তে আস্তে আপনার ব্র্যান্ডের পরিচিতি বাড়াতে সাহায্য করবে।
কিভাবে ভিডিও মার্কেটিং করব?
ভিডিও মার্কেটিং করার জন্য প্রথমে একটি ভিডিও তৈরি করতে হবে, তারপর সেটি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পাবলিশ করতে হবে। তবে সফলভাবে ভিডিও মার্কেটিং শুরু করতে চাইলে আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ আপনাদের সামনে তলে ধরছি-
১।) ভিডিও মার্কেটিংয়ের প্রস্তুতি
ভিডিও মার্কেটিংয়ে আপনার যদি উদ্দেশ্য থাকে ইউটিউব মনিটাইজেশন তাহলে সেটি আপনার জন্য হালাল হবে না। ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে মনিটাইজেশন করে আয় করাকে উলামায়ে কেরামগণ হারাম আখ্যা দিয়েছেন। অনেক সময় দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়াতে ইউটিউব চ্যানেলের মনিটাইজেশন পাওয়ার পর আলহামদুলিল্লাহ লিখে পোস্ট দিতে। একবার ভাবুনতো হারাম ইনকামের একটি পথ আপনার জন্য যখন উন্মুক্ত হয় আর আপনি আলহামদুলিল্লাহ বলে সেটি গ্রহণ করেন কতটা মূর্খতার পরিচয় এটি।
ভিডিও মার্কেটিং শুরু করতে চাইলে আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
- কারা আপনার গ্রাহক এবং তারা কি চায় তা বোঝার চেষ্টা করুন
- ভিডিওর জন্য সঠিক পরিকল্পনা করুন
- মানসম্মত স্ক্রিপ্ট তৈরি করুন
- ভিডিওর কোয়ালিটি নিশ্চিত করুন
- ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গুলোতে কনটেন্ট ছড়িয়ে দিন
২।) দর্শকদের রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী কনটেন্ট তৈরি করুন
মনে করুন, আপনি ল্যান্ড প্রপার্টি বিক্রির একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য মার্কেটিং করছেন কিন্তু আপনার টার্গেট অডিয়েন্স শুধুমাত্র শিক্ষার্থীরা। এমন যদি হয় তাহলে খুব অল্প সময়ে আপনি দর্শক হারাবেন এবং তারা আপনার ভিডিও দেখাও বন্ধ করবে। এজন্য আপনাকে টার্গেট করতে হবে এমন একটি শ্রেণীকে যারা সত্যিকার অর্থেই ল্যান্ড প্রপার্টি কেনার জন্য উপযুক্ত।
তাই মার্কেটিং শুরু করার আগেই আপনার পণ্য বা সেবার জন্য কারা টার্গেট অডিয়েন্স হবে তা রিসার্চ করে নিতে হবে আপনার ভিডিও কনটেন্টের দর্শক কারা হবে। আপনি বিভিন্ন অ্যানালিটিক্স টুলস এর মাধ্যমে এই কাজটি সহজেই করে নিতে পারবেন। আপনি যদি কনটেন্টের জন্য সঠিকভাবে অডিয়েন্স টার্গেট না করলে অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার ভিডিও ফেইল করতে পারে।
৩।) ভিডিওর জন্য সঠিক পরিকল্পনা করুন
পণ্য বা সেবা সংক্রান্ত ভিডিও তৈরি করলে চেষ্টা করবেন ভিডিও দৈর্ঘ্য যতটা কম রাখা যায়। অনেক সময় বড় ভিডিও দর্শকরা পুরোটা দেখতে চায় না। এজন্য সম্ভব হলে কম দৈর্ঘ্যের প্রাসঙ্গিক ভিডিও তৈরি করুন যাতে করে দর্শক আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ভিডিও থেকে জানতে পারে। আপনার ভিডিও টির দৈর্ঘ্যকে প্রয়োজনমতো কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিতে পারেন। যেমন, ভিডিওটির কোনো ভাগে কি উপস্থাপন করবেন এবং এর জন্য কতটুকু সময় ব্যয় করবেন এগুলো আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখলে ভিডিও তৈরি সহজ হয়। সঠিক পরিকল্পনার কারণে অনেক ছোট একটি ভিডিও আপনার মার্কেটিংয়ের জন্য দারুণ কার্যকরী হতে পারে।
৪।) মানসম্মত স্ক্রিপ্ট তৈরি করুন
স্ক্রিপ্ট একটা ভিডিও কনটেন্ট এর প্রাণ। আপনি যদি প্রথমেই এই ধাপটি এড়িয়ে যান তাহলে মনে রাখুন এডিটিং এ আপনাকে প্রয়োজনের চাইতে অনেক বেশি সময় ব্যয় করতে হবে। দর্শকদের হাতে এখন অবিরত ভিডিও কনটেন্ট দেখার সুযোগ থাকে তাই গদবাধা কথামালা এবং এলোমেলো স্ক্রিপ্ট হলে অল্প সময়েই দর্শক আপনার ভিডিও থেকে বেরিয়ে পড়বে। তাই এমন ভাবে স্ক্রিপ্ট লিখতে হবে যেন দর্শক নিজেও আপনার ভিডিওর সাথে জার্নি করতে পারে। দর্শককে একটা পরিষ্কার ধারণা দিয়ে আপনার স্ক্রিপ্ট শুরু করুন যে, কনটেন্টে আপনি তাকে কি কি দেখাতে যাচ্ছেন। স্ক্রিপ্ট লেখার পরে এটা একাধিক বার পড়তে হবে, সংশোধন করতে হবে আর এভাবে ভিডিও কনটেন্ট এর জন্য একটি যথার্থ স্ক্রিপ্ট লেখা হয়ে যাবে।
৩।) ভিডিওর কোয়ালিটি নিশ্চিত করুন
ভিডিও মার্কেটিংয়ের জন্য যখন আপনি কোনো ভিডিও তৈরি করবেন তখন তার কোয়ালিটি অবশ্যই ভালো হতে হবে। কোয়ালিটি ভিডিও তৈরীর জন্য বেশকিছু ইকুইপমেন্ট এর প্রয়োজন হবে। যেমন একটি ভালো মানের ট্রাইপড প্রয়োজন হবে। আপনি কি ধরনের ক্যামেরা বা মোবাইল ব্যবহার করছেন ভিডিও তৈরীর জন্য এর উপর ডিপেন্ড করে ট্রাইপড নিতে হবে। অডিও কোয়ালিটি মান সম্মত হতে হবে। আপনার স্ক্রিপ্ট এবং ভিজ্যুয়্যাল অনেক ভালো হলেও যদি অডিও ভালো না হয় তাহলে পুরো শ্রমটাই বৃথা যাবে। ভিডিও শুট করার সময় সাউন্ড নেয়ার জন্য যদি আপনি ডিভাইসের ডিফল্ট মাইক্রোফোন ব্যবহার করেন সে ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই আপনি মানসম্মত অডিও পাবেন না। তাই অল্প কিছু টাকা খরচ করে হলেও আলাদা করে মানসম্মত মাইক্রোফোন বা অডিও ডিভাইস কিনতে হবে।
৪।) ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গুলোতে কনটেন্ট শেয়ার করুন
ভালো একটি কন্টেন্ট তৈরীর পর এর পরবর্তী ধাপ হচ্ছে তা বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়া। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করা। চেষ্টা করবেন কোনো একটি ভিডিও আপলোড করার পর প্রথম দিকে অনেক বেশি দর্শক আনতে। তাহলে ভিডিওটি খুব দ্রুত সময়ে র্যাংক করবে।
ভিডিও মার্কেটিংয়ের শুরুতেই প্রফেশনাল ভাবে ক্যামেরা, লাইট, অডিও ইত্যাদি সেটআপ করতে গেলে আপনার অনেক টাকা খরচ হয়ে যেতে পারে। এজন্য শুরুর দিকে মোবাইল দিয়ে ছোট ছোট ভিডিও তৈরি করে মার্কেটিংয়ের কাজ গুলো করতে পারেন। তবে একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন আপনার ভিডিওটা যেনো কোনো প্রকার মিউজিক, নারী দৃশ্য ইত্যাদি না থাকে। এজন্য হালাল পণ্য নিয়ে কাজ করুন হালালভাবে ভিডিও তৈরি করে সেটি আপনার পণ্য, সেবা বা ব্যবসা কে প্রমোট করার জন্য ব্যবহার করুন।
শেষ কথা
আমাদের দেশে অনেকেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ হিসেবে ইউটিউবের চ্যানেল অপটিমাইজেশন এবং ভিডিও থাম্বনেইল তৈরির কাজগুলো করছে। এক্ষেত্রে হালাল হারামের বাছ বিচার না করে যে কোনো ধরনের চ্যানেলের কাজ নেয়া ঠিক হবে না। ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও মার্কেটিং এর করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে ভিডিওগুলোতে কোন আপত্তিকর কনটেন্ট, নারী দৃশ্য, মিউজিক ইত্যাদি আছে কিনা। যদি এসব বিষয় ভিডিওতে থাকে তাহলে সেই চ্যানেলের কাজ করা উচিত হবে না।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.