২০২৩ সালে জনপ্রিয় ৫টি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ

জনপ্রিয় ৫টি ফ্রিল্যান্সিং স্কিল সমূহ

বর্তমানে ইন্টারনেটের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলছে। ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়ার ফলে প্রতিনিয়ত পৃথিবী আরো ছোট হয়ে আসছে। ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে অনেক কিছুই এখন করা যাচ্ছে। একটা সময় যেসব কাজগুলো অনলাইনে করার কথা কল্পনাই করা যেতো না সেসব কাজই এখন অনলাইনে সহজেই হচ্ছে। ফলে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, এতে তৈরি হচ্ছে আয়ের নতুন সম্ভবনা।

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কী? 

ইন্টারেটের এই যুগে তরুণদের কাছে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় নাম। ফ্রিল্যান্সিং অর্থ হচ্ছে স্থায়ীভাবে কারো অধীনস্থ না থেকে স্বাধীনভাবে কোনো কাজ করা। প্রথাগত চাকুরী না করে নিজের পছন্দ অনুযায়ী মুক্তভাবে কাজ করাকেই ফ্রিল্যান্সিং বলে। যারা এধরনের কাজ করেন তাদের বলা হয় ফ্রিল্যান্সার।  

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ

একটি সাধারণ চাকরি থেকে ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে মূল পার্থক্যই হচ্ছে স্বাধীনভাবে কাজ করা যায়। যারা চাকরির ধরাবাধা নিয়ম পছন্দ করেন না তাদের জন্য অর্থ আয়ের সহজ উপায় হলো ফ্রিল্যান্সিং। তবে চাকুরীজীবীদের মত এখানে নির্দিষ্ট কোনো বেতন নেই। চুক্তির ভিত্তিতে বা কাজের ধরণ অনুযায়ী বেতন দেয়া হয়। আপনি জানলে অবাক হবেন যে বর্তমানে বাংলাদেশের আয়কৃত বৈদেশিক মুদ্রার তৃতীয় উৎস হলো ফ্রিল্যান্সিং। 

কোনো কোম্পানীর অধীনে কাজ না করে স্বাধীনভাবে নিজের পছন্দ অনুযায়ী কাজ করা বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। এটি একধরনের চুক্তিভিত্তিক কাজ। ফ্রিল্যান্সিং শব্দটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে আরেকটি শব্দ। তার নাম হলো “আউটসোর্সিং”। কোনো কোম্পানীতে যখন তার রেগুলার কর্মাচারীদের বাইরে কাউকে দিয়ে চুক্তিভিত্তিক কাজ করানো হয় তখন তাকে বলা হয় আউটসোর্সিং। 

যেমনঃ ধরুণ, আপনি চাচ্ছেন আপনার কোম্পানীর জন্য একটি ওয়েবসাইট খুলবেন কিন্তু আপনার রেগুলার কর্মাচারীদের মধ্যে কেউ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন না। আবার শুধুমাত্র ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য নতুন কর্মচারী নিয়োগ করা ব্যয়বহুল। এই পরিস্থিতিতে আপনি যদি কোনো ফ্রিল্যান্সারের সাথে সাময়িক সময়ের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করার চুক্তি করেন তাহলে সেটি হবে আউটসোর্সিং। বিভিন্ন কোম্পানীর প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের আউটসোর্সিং করাকেই ফ্রিল্যান্সিং বলা হয়। 

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ হচ্ছে, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কন্টেন্ট প্ল্যানিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং,ভিডিও এডিটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন,  ডাটা এন্ট্রি, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি। এগুলোর পাশাপাশি কোম্পানীর কাজের চাহিদা অনুযায়ী স্কিল তৈরি করে একজন ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায়। 

কাজ জানলেই কি ক্লায়েন্ট পাওয়া যায়? কোথায় গেলে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ পাওয়া যায়?

ফ্রিল্যান্সার ও তাদের ক্লায়েন্টদের মধ্যে কাজ আদান প্রদান করার প্ল্যাটফর্মটিকে বলা হয় মার্কেটপ্লেস। সহজ কথায় যদি বলি তাহলে মার্কেটপ্লেসকে বলা হয় কাজের বাজার। কারণ, এই মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সার তাদের পছন্দ অনুযায়ী কাজ খুঁজে নিতে পারেন। অন্যদিকে একজন ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারের কাজের ধরণ এবং রিভিউ দেখে ফ্রিল্যান্সার এর সাথে কাজ নিয়ে চুক্তি করতে পারেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন মার্কেটপ্লেস হচ্ছে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ফ্রিল্যান্সার এবং ক্লায়েন্টের কানেক্টেড হওয়ার একটি জায়গা। 

ইন্টারনেটে খুঁজলে অসংখ্য মার্কেটপ্লেসে পাওয়া যাবে। সবগুলো মার্কেটপ্লেসের লক্ষ্য একরকম হলেও তাদের কাজে কিছু ভিন্নতা থাকে। যেসব বাংলাদেশি নতুন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেছেন তাঁরা আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে নানা রকম অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যেমনঃ একজন ফ্রিল্যান্সারকে কাজের ধরণ অনুযায়ী রেটিং দেয়া হয়। এই রেটিং দেখে ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যাসারটির প্রতি ইন্টারেস্টেড হয় । এর পাশাপাশি রিভিউ দেয়া যায় অনেক মার্কেটপ্লেসে। যা একজন ক্লায়েন্ট এর জন্য ফ্রিল্যান্সারকে বিশ্বাস করতে সুবিধা হয়। নতুন ফ্রিল্যান্সারদের রেটিং বা রিভিউ না থাকার কারণে কাজ পেতে সমস্যা হয়। একইভাবে ক্লায়েন্ট এর প্রোফাইলে রেটিং এবং রিভিউ দেয়া যায়। অনেক সময় ফ্রিল্যান্সাররা প্রতারিত হন। ফ্রিল্যান্সার কাজ করে দেয়ার পর তার ন্যায্য বেতন পান না। ক্লায়েন্টের রিভিউ দেখে চুক্তি করলে তখন প্রতারণার স্বীকার হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে। তাই ক্লায়েন্ট এবং ফ্রিল্যান্সার উভয়ের জন্য ভালো রেটিং এবং রিভিউ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

আরেকটি সমস্যা হয় পারিশ্রমিক পাওয়া নিয়ে। আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের সাথে চুক্তি করলে পেমেন্ট পাঠানো নিয়ে অনেক সময় ঝামেলা হয়। কারণ বাংলাদেশে সকল ধরণের আন্তর্জাতিক পেমেন্ট মেথড এভেইলেবল নয়। যেমনঃ পে-পাল, এজন্য অনেক ফ্রিল্যান্সার বিদেশি কোম্পানীর সাথে কাজ করতে চান না। 

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কি কি প্রয়োজন?

আর্টিকেলটি এতক্ষণ পড়ার পর নিশ্চয় এখন জানতে ইচ্ছে হচ্ছে কি কি জানলে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং করা যায়। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা জরুরী। কিন্তু  ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আপনার যে বিষয়গুলো জানা প্রয়োজনঃ

ফ্রিল্যান্সিং করতে গেলে কি কি লাগে

ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি প্রফেশনাল জব। অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে, ফ্রিল্যান্সিং মোবাইল দিয়ে করতে পারবে কিনা। ফ্রিল্যান্সিং এ অনেক সময় অনেক টুলস বা সফটওয়্যার এর প্রয়োজন হয়ে থাকে যা আসলে মোবাইলে সম্ভব না। তাই একজন প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হতে কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপের প্রয়োজন । 

কিন্তু কম্পিউটার থাকলেই কি ফ্রিল্যান্সিং করা যাবে? না, শুধু কম্পিউটার থাকলেই ফ্রিল্যান্সিং করা যায় না। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে। বেসিক জ্ঞানগুলো হলোঃ ইন্টারনেট কানেক্টেড করা, কোনো সফটওয়্যার ডাউনলোড করে সেটআপ করা, কোনো কিছু নিয়ে রিসার্চ করা এবং মাইক্রোসফট অফিস, গুগল ড্রাইভ  ইত্যাদি ব্যবহার করতে জানা।

এরপর আপনার পচ্ছন্দ অনুযায়ি স্কিল ডেভেলপ করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং স্কিল বাড়ানোর পাশাপাশি আপনাকে নিজের লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। আপনি কোন স্কিলটি ভালো পারেন সেদিকে ফোকাস করা। আপনি আপনার স্কিল যত বাড়াবেন আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার তত ভালো হবে। 

এরপর যারা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান তাঁদের অবশ্যই ভেরিফিকেশেনর জন্য কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়। যেমনঃ  জাতীয় পরিচয়পত্র/ পাসপোর্ট/ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর স্ক্যান কপি।  ফ্রিল্যান্সিং করে বৈদেশিক আনার জন্য একটি ব্যাংক একাউন্টের ও প্রয়োজন। 

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ?

বর্তমানে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে আশেপাশে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যাও বেড়ে চলছে। আশেপাশের এত মানুষকে ফ্রিল্যান্সিং করতে দেখে মনে হতে পারে ফ্রিল্যান্সিং অনেক সহজ। আসলে ব্যাপারটা কিন্তু সেরকম না। একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে প্রচুর সময় এবং ধৈর্য্যের প্রয়োজন। কাজ করতে থাকার ইচ্ছা এবং ফ্রিল্যান্সিং এর মূল বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন।

যখন কারো টেকনলজি নিয়ে ভালো জ্ঞান থাকে তখন তার জন্য ডিজিটাল জগতে কোনো কিছু শেখা অন্য পাঁচ দশ জনের থেকে তুলনামূলক সহজ হয়ে থাকে। অন্যদিকে যদি কেউ কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক জ্ঞানগুলো না জানে তখন তার জন্য ফ্রিল্যান্সিং করাটা ততটাই কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু তারপরেও চেষ্টা করলে সবই সম্ভব। 

আপনি যদি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ সম্পর্কে বেসিক জিনিসগুলো না জানেন কিন্তু আপনি যদি শিখতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে আগে ঠিক করতে হবে আপনি কম্পিউটারের কোন বিষয়টি শিখতে চান ।

কম্পিউটার সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানার পর আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ এর মাঝ থেকে নিজের পছন্দের স্কিল নির্ধারণ করতে হবে। যেমনঃ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ফেসবুক মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ইত্যাদি। 

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে কাজ শেখার জন্য  আপনাকে গ্রাফিক ডিজাইনের ভালো ভালো টিউটোরিয়াল খুঁজে বের করতে হবে। এই টিউটোরিয়াল খুঁজে পাওয়ার জন্য আপনি ইউটিউব বা গুগলে সার্চ করতে পারেন। আপনি আপনার পছন্দের স্কিলটি নিয়ে যখন ইউটিউবে বা গুগলে সার্চ করবেন তখন একদম জিরো থেকে শেখায় এমন কোর্সও খুঁজে পাবেন। এই কোর্সগুলো দেখে নিজের স্কিল ডেভেলপ করার পর আপনাকে আপনার স্কিল সম্পর্কিত একটি পোর্টফোলিও তৈরি করতে হবে। 

এরপর দরকার হবে পোর্টফোলিও। পোর্টফোলিও হলো আপনার স্কিলগুলো উপস্থাপন করার একটি মাধ্যম। সাধারণ চাকুরীর বাজারে আমরা যেরকম নিজেদের এডুকেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড, অভিজ্ঞতা নিয়ে সিভি তৈরি করি সেরকম ফ্রিল্যান্সাররা নিজদের স্কিল উপস্থাপন করার জন্য পোর্টফোলিও তৈরি করে থাকে। আপনি যে কাজগুলো শিখছেন সেগুলোর স্ক্রিনশট তুলে পোর্টফোলিওতে যুক্ত করলে একজন ক্লায়েন্টের আপনার কাজের ধরণ বা অভিজ্ঞতা বুঝতে সহজ হয়। 

একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে  ক্যারিয়ার গড়ার জন্য প্রতিনিয়ত আপনার স্কিলস বাড়াতে হবে। নিয়মিত শিখতে হবে। এই অভ্যাস না থাকলে আপনার এই ফ্রিল্যান্সার জগতে টিকা থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে। 

এগুলোর পাশপাশি একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনাকে ইংরেজি জানতে হবে ভালোভাবে। কারণ ইংরেজি হচ্ছে আন্তর্জাতিক ভাষা। আপনি যখন আন্তর্জাতিক কোনো ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করবেন তখন আপনাকে সঠিকভাবে ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে কথা বলতে হবে। তাই কমিউনিকেশন স্কিল ভালো করার জন্য ইংরেজি ভাষা জানার জরুরী। 

২০২৩ সালের জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ জন্য শত শত প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলো হলোঃ 

  1. আপওয়ার্ক
  2. ফাইবার.কম
  3. ফ্রিল্যান্সার.কম
  4. পিপল আওয়ার.কম
  5. গুরু.কম
  6. এসিওক্লার্ক.কম
  7. 99designs.com

এগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় ৫টি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস নিয়ে খুঁটিনাটি জানতে ক্লিক করুন। 

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য বর্তমানে প্রয়োজন নানা ধরণের স্কিল। এই স্কিলগুলো আবার সময়ের এর সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং স্কিলসমূহ হচ্ছেঃ

  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • কন্টেন্ট রাইটিং
  • গ্রাফিক ডিজাইন
  • ভিডিও এডিটিং
  • সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন

১।) ওয়েব ডেভেলপমেন্ট

জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং স্কিলসমূহের মধ্যে অন্যতম স্কিল হলো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য প্রয়োজন একটি সাধারণ ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এবং নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ। এরপর আপনাকে প্রথমে শিখতে হবে HTML যা শিখতে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না। এরপর আস্তে আস্তে বিভিন্নরকমের প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিখতে হবে, যেমনঃ C++, JavaScript, Php ইত্যাদি। এগুলো শেখার জন্য ইউটিউব প্রচুর পরিমাণে ফ্রি টিউটোরিয়াল রয়েছে যেখান থেকে আপনি কোনো ধরণের অর্থ খরচ ছাড়াই প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিখে নিতে পারেন।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট

এসব বিষয়ে অনেক বেশি দক্ষ হতে চাইলে সেক্ষেত্রে কিছু বই কিনতে পারেন অথবা প্রিমিয়াম বা পেইড ভিডিওগুলো কিনতে পারেন। ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য প্রোগামিং ল্যাংগুয়েজ শেখা ছাড়া আরেকটা বিষয়ের প্রয়োজন তা হলো ধৈর্য্য। আপনি যদি যদি ধৈর্য্যর সাথে প্রত্যেকটি ধাপ অনুসরণ করেন তাহলে আপনি একজন সফল ডেভেলেপার হয়ে উঠবেন খুব সহজেই। আপনি যত বেশি কাজ করবেন তত বেশি কাজের দক্ষতা বাড়বে। এতে করে আপনার আয় বাড়বে। 

২।) কন্টেন্ট রাইটিং

কন্টেন্ট রাইটিং

একজন ভালো কন্টেন্ট রাইটার হওয়া একটি আর্ট। কন্টেন্ট বিভিন্ন কারণে লেখা হয়। যেমনঃ ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া, আর্টিকেল এর জন্য। কন্টেন্ট রাইটিং হচ্ছে কোনো বিষয় নিয়ে সহজ ভাবে ইউজারের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন তথ্য ইউজারের সামনে তুলে ধরা। একটি আর্টিকেল বা ব্লগ পরে যেন ইউজার তার কন্টেন্টটি পড়ার কারণ বা চাহিদা পূরণ করতে পারে বা সে যেন তার প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য খুঁজে পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

একটি কন্টেন্ট পরিপূর্নভাবে লেখার জন্য টপিকটি নিয়ে খুব ভালো রিসার্চ করা দরকার। যে তথ্যটি সবচেয়ে বেশি আপডেটেড সেটা বেছে নিতে হবে। আপনাকে ইউজার টার্গেটেড কি ওয়ার্ডগুলো নিয়ে আর্টিকেল লিখতে হবে  যা আপনার পেজ বা ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়াতে সাহায্য করবে।

৩।) গ্রাফিক ডিজাইন

গ্রাফিক ডিজাইন ফ্রিল্যান্সিং এর অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন সেক্টর।  গ্রাফিক ডিজাইন জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হলো বর্তমানে গ্রাফিক ডিজাইনের ব্যবহার সর্বপরিসরে। গ্রাফিক ডিজাইন হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের কালার কম্বিশনের মাধ্যমে অডিয়েন্সকে কোনো বিশেষ মেসেজ দেয়া। গ্রাফিক ডিজাইনের আরেক নাম হলো কমিউনেকেশন ডিজাইন। ভার্চুয়াল এবং ফিজিক্যাল দুইধরণের গ্রাফিক ডিজাইন হয়ে থাকে। 

গ্রাফিক-ডিজাইন

ভার্চুয়াল গ্রাফিক ডিজাইন হলো ব্যানার , লোগো , বিজ্ঞাপন বা ছবি ইত্যাদি। অন্যদিকে, ফিজিক্যাল গ্রাফিক ডিজাইন হলো পলিটিক্যাল পোস্টার, কোনো ইভেন্টের ব্যানার , বিলবোর্ড ইত্যাদি। গ্রাফিক ডিজাইনাররা ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী প্রেজেন্টেশন, লোগো, ব্যানার বা পোস্টার ডিজাইন করে থাকেন। 

একজন দক্ষ গ্রাফিক ডিজাইনার হতে আপনি অনলাইনের ফ্রি রিসোর্সগুলো ব্যবহার করতে পারেন। গ্রাফিক ডিজাইনার হওয়ার জন্য কিছু সফটওয়ারের ব্যবহার শিখতে হবে। যেমনঃ Adobe Photoshop, Adobe illustrator, Adobe indesign. আপনি বিগিনার হলে Adobe Photoshop দিয়ে শুরু করতে পারেন। 

গ্রাফিক ডিজাইনার হিসবে আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং অথবা পার্মানেন্ট জব করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনি জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে ক্লায়েন্ট খুঁজতে পারেন। 

৪।) ভিডিও এডিটিং

ভিডিও এডিটিং করে ফ্রীল্যান্সিং

যাদের কাছে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ নেই তাঁরা মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিটিং শুরু করতে পারেন। মোবাইলে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমেও খুব সুন্দর ভিডিও এডিটিং করা যায়। ভিডিও এডিটিং করার জন্য বিভিন্ন ধরণের অ্যাপস রয়েছে। যেমনঃ Capcut, Filmora, Inshot , KInemaster ইত্যাদি। বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই ইউটিউবে প্রচুর পরিমাণে মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিটিং রিসোর্স রয়েছে। আপনি চাইলে টিউটোরিয়ালের ধাপগুলো অনুসরণ করে সহজে শিখে নিতে পারবেন ভিডিও এডিটিং।

৫।) সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং স্কিলসমূহ এর মধ্যে অন্যতম একটি স্কিল হলো সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করে শুধুমাত্র একটি কন্টেন্টকেই র‍্যাঙ্ক করানো হয় না বরং যেকোনো কোম্পানি, ব্র্যান্ড, প্রোডাক্ট, বা তাদের সার্ভিসগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করে সার্চ ইঞ্জিন গুলোর প্রথম পাতায় আসার জন্য কাজ করা হয়।

কোনো কন্টেন্ট যদি সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে থাকে তাহলে তাতে ক্লিক করার সম্ভবনা বেড়ে যায়। যার কারণে ওয়েবসাইটে ভিজিটর বৃদ্ধি পায়। এতে করে আয় বাড়ে। সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের জন্য ইউজার টার্গেটেড টপিক অনুযায়ী কন্টেন্ট ক্রিয়েট করতে হয়। এর জন্য সমসাময়িক টপিক নিয়ে রিসার্চ করা জরুরী। 

উপসংহারঃ

সর্বশেষে বলা যায় ফ্রিল্যান্সিং হলো এমন একটি পেশা যা তথাকথিত পেশার মতো নয়।  ফ্রিল্যান্সিং হলো স্বাধীনভাবে নিজের পছন্দের কাজ করা। আর সে ফ্রিল্যান্সিং যদি অনলাইন করা হয়ে থাকে তখন তাকে বলা হয় অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং। আশা করি এই আর্টিকেল পড়ে আপনার ফ্রিল্যান্সিং কি এবং বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং স্কিলসমূহ নিয়ে ধারণা হবে। এছাড়া ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কিত কোনো তথ্য জানার থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানাবেন। 

এই ওয়েবসাইটের সকল কন্টেন্ট (ছবি, লেখা ইত্যাদি) অন্য কোথাও কপি করে বা পরিবর্তন করে পাবলিশ করার আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। যদি কেউ এমন অপরাধমূলক কাজ করেন তাহলে DMCA পাঠানো সহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।



Leave a Reply