মাইক্রোসফট এক্সেল কি? কেন শিখবেন MS Excel এর এর কাজ?

মাইক্রোসফট এক্সেল কি

কর্মক্ষেত্রে কিভাবে মানুষের সময় বাঁচানো যায় এবং কাজ আরো সহজে করা যায় এটি হচ্ছে বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তি বা সফটওয়্যার গুলোর মূল লক্ষ্য। প্রযুক্তির তেমনই একটি অভাবনীয় আবিষ্কার হলো মাইক্রোসফট এক্সেল (Microsoft Excel)। ছোট থেকে বড় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই মাইক্রোসফট এক্সেল (MS Excel) এর গুরুত্ব অপরিসীম। দেশে হোক বা বিদেশে কর্মক্ষেত্রে এই সফটওয়্যার টিই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এক্সেল এর সাহায্যে বৃহৎ আয় ব্যয়ের হিসাব নিকাশ থেকে শুরু করে একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ ফাইল খুব সহজেই তৈরি করা সম্ভব। বর্তমান সময়ে মাইক্রোসফট এক্সেল এর সাথে পরিচিত নয় বা এর নাম শুনেননি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে।

যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ বা হোক সাধারণ কোন হিসাব নিকাশের কাজ অথবা কোন বড় ব্যবসার আয়-ব্যয়ের হিসাব বিকাশ কয়েক মিনিটেই করে ফেলা যায় মাইক্রোসফট এক্সেল (Microsoft Excel) এর সাহায্যে। শুধু তাই নয় এক্সেলে এমন অনেক অসাধারণ ফিচার রয়েছে যা ব্যবহার করে অনেক জটিল কাজও খুব সহজেই করে ফেলা সম্ভব। এমনকি শুধুমাত্র এই সফটওয়্যারটির ওপর দক্ষতা অর্জন করেই আপনি আপনার ক্যারিয়ারকে আরো সুদৃঢ় করে গড়ে তুলতে পারবেন। আজকে এই আর্টিকেলে মাইক্রোসফট এক্সেল কি? এক্সেল এর কাজ কি কি? মাইক্রোসফট এক্সেল এর বিভিন্ন ফিচার, মাইক্রোসফট এক্সেল কেন এবং কিভাবে শিখবেন? এইসব বিষয়ে বিস্তারিত জানবো ইনশাআল্লাহ।

মাইক্রোসফট এক্সেল কি? (What is Microsoft Excel?)

মাইক্রোসফট এক্সেল কি

এক্সেল হলো মাইক্রোসফট অফিসের উইন্ডোজ ভিত্তিক এক প্রকার স্প্রেডশিট এনালাইসিস প্রোগ্রাম। এক্সেল এর পৃষ্ঠাটি অনেকগুলো সারি এবং কলামে বিভক্ত হওয়ায় এতে ডাটা এন্ট্রি করে নিখুঁতভাবে গ্রাফ তৈরির মাধ্যমে বিশাল তথ্যকে বিশ্লেষণ করা যায়। আর এজন্যই এই সফটওয়্যারকে স্প্রেডশিট এনালাইসিস প্রোগ্রাম বলা হয়। এক্সেল এর স্প্রেডশিটকে একটি বিশাল পৃষ্ঠার সাথে তুলনা করা যায়। খাতার মধ্যে আমরা কলম, রাবার অথবা ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে যা যা করতে পারি এক্সেল শীটে আমরা তার চেয়েও জটিল কাজগুলো খুব সহজে করতে পারি। কিবোর্ড এর কি গুলোকেই কলমের মতো ব্যবহার করে এক্সেল শিটে গাণিতিক তথ্যগুলোকে আমরা নিজেদের ইচ্ছে মতো সাজিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যালকুলেশন করতে পারি।

মাইক্রোসফট এক্সেল এর স্প্রেডশিটে কলামের মধ্যে সাধারণত আলফাবেটিক লেটার এবং রো’তে নিউমেরিক্যাল ডাটা লেখা হয়। কিন্তু আপনি চাইলে আপনার ইচ্ছামত প্রয়োজন অনুযায়ী এটিকে ব্যবহার করতে পারবেন। নিউমেরিক্যাল ও স্ট্যাটিসটিক্যাল ডাটা রেকর্ড ও বিশ্লেষণ করার জন্য এতে অসংখ্য ফিচার রয়েছে। যেমনঃ প্রোগ্রামিং, ক্যালকুলেশন, গ্রাফ টুল, কন্ডিশনাল ফরমেটিং, ইত্যাদি।

মাইক্রোসফট এক্সেল (MS Excel) এর কাজ কি?

আশা করি মাইক্রোসফট এক্সেল কি তা এতক্ষণে বুঝে ফেলেছেন। চলুন, এবার তাহলে মাইক্রোসফট ক্যানসেল এর কাজ কি কি সে বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।

অনেক আগে থেকেই মাইক্রোসফট এক্সেল অফিসের বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। পারিবারিক হিসাব হোক বা একাডেমিক হিসাব কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক হিসাব সব ক্ষেত্রেই এক্সেল এর ব্যবহার সবার আগে। এর কারণ হলো এক্সেল এর মাধ্যমে সব ধরনের হিসাব-নিকাশ, ডাটাবেজ তৈরি, ডাটা এনালাইসিস এবং একটি প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের হিসাব থেকে শুরু করে কর্মচারীদের বেতনের হিসাব নিকাশ সংরক্ষণ করা যায় খুবই দ্রুত এবং অনেক সহজ পদ্ধতিতে।

মাইক্রোসফট এক্সেল এর কাজ সমূহঃ

এতক্ষনে আপনাদের মনে নিশ্চয় প্রশ্ন জেগেছে, এক্সেল এর কাজ কিভাবে করতে হয়? মাইক্রোসফট এক্সেল এর সাহায্যে সাধারণত অনেক কাজই করা হয়, তার মাঝে প্রধান যে কাজগুলো করা যায় সেগুলো হলোঃ

  • ক্যালকুলেশন করা ( যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ)
  • ডাটা এন্ট্রি, স্টোরেজ এবং এনালাইসিস
  • রিপোর্টিং ও ভিজুয়ালাইজেশন
  • একাউন্টিং ও বাজেটিং
  • ক্যালেন্ডার এবং সিডিউলিং

১। ক্যালকুলেশন ( যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ)

কিভাবে এক্সেল এর ক্যালকুলেশন এর কাজ

ক্যালকুলেশন অর্থাৎ যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ এগুলো হলো এক্সেল এর বেসিক বিষয়। মাইক্রোসফট এক্সেলে অসংখ্য প্রিভিল্ড ফিচার এবং ফর্মুলা রয়েছে। শুধু তাই নয়, ৪৫০ এরও বেশি ক্যাটাগরাইজড  ফাংশন রয়েছে এখানে।  এগুলোর মধ্যে কয়েকটি হলঃ লজিক ফাংশন, ত্রিকোণমিতিক ফাংশন, ডেট এন্ড টাইম ইত্যাদি। কিন্তু মাইক্রোসফট এক্সেল এর কাজ এই ৪৫০ টি ফাংশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। নিজেদের প্রয়োজন মত কাস্টম ফর্মুলা তৈরি করেও এখানে কাজ করা সম্ভব।

২। ডাটা এন্ট্রি, স্টোরেজ এবং এনালাইসিস

ডাটা এন্ট্রি এবং এনালাইসিস অথবা ডাটা স্টোর করা, এই কাজগুলো করার জন্য এক্সেল ই সবচেয়ে ভালো সফটওয়্যার। সাধারণত মাইক্রোসফট এক্সেলের একটি শিটে সর্বোচ্চ ১,০৪৮,৫৭৬টি সারি এবং ১৬,৩৮৪টি কলাম থাকতে পারে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এক্সেলের সাইজ ব্যবহৃত ডিভাইসের কম্পিউটার ক্যাপাসিটি ও মেমোরির উপর নির্ভর করে।

কোন ডাটা একবার সেট করলে বিভিন্ন টুল এবং ফর্মুলা ব্যবহার করে তা যে কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়। কাস্টমারের মেইল লিস্ট করা, কর্মচারীদের কাজের ও স্যালারির লিস্ট করা এবং কর্মীদের রুটিন করা থেকে শুরু করে হরেক রকম লিস্ট এর কাজ মাইক্রোসফট এক্সেল এর সাহায্যে অনায়াসেই করা যায়।

মাইক্রোসফট এক্সেলের অন্যতম একটি অপরিহার্য অংশ হল ডাটা বিশ্লেষণ। এক্সেলে বিভিন্ন ডাটা ইনপুট করে সেখানে আমরা সূত্র ব্যবহার করতে পারি এবং পিভট টেবিল এর সাহায্যে ডাটা বিশ্লেষণ করতে পারি। যেমনঃ ডাটা শটিং ও ফিল্টারিং ফিচার ব্যবহার করে অনেকগুলো ডাটা থেকে আমরা সহজেই প্রয়োজনীয় ডাটা খুজে পাওয়া যায়।

৩। রিপোর্টিং ও ভিজুয়ালাইজেশন

রিপোর্ট তৈরি বা ভিজুয়ালাইজেশন এর কাজকে গ্রাফ এবং চার্ট ফিচার এর মাধ্যমে মাইক্রোসফট এক্সেল আরো আকর্ষণীয় এবং সহজ করে তুলেছে। এক্সেল এর সাহায্যে শুধু একটা টেমপ্লেটে ব্যবহারের মাধ্যমেই সাদামাটা টেবিলের আকর্ষণীয় একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করা সম্ভব।

৪। একাউন্টিং ও বাজেটিং

কাস্টমার রেকর্ড দেখাশোনা করা এবং ডাটা খুঁজে পাওয়ার একটি সহজ পদ্ধতি মাইক্রোসফট এক্সেল। এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে বিল পে করা, লাভ-ক্ষতি এবং খরচের হিসাব ট্রাকে রেখে অসংখ্য বিজনেস সহজেই সামলানো যায়। যার ফলে কর্মচারী অথবা ক্লাইন্ট সবার সাথে একটি ভাল সম্পর্কও গড়ে উঠবে।

৫। ক্যালেন্ডার এবং সিডিউলিং

দিন তারিখ অথবা সময় ট্রাক রাখার জন্য মাইক্রোসফট এক্সেলের অটো ফিচার অনেক কার্যকরী। শুধু তাই নয় প্রয়োজন হলে টেমপ্লেট ব্যবহার করে ক্যালেন্ডার বানিয়েও নেওয়া যায়। ক্যালেন্ডার বানিয়ে কোন বিশেষ তারিখে কোন কাজ থাকলে এক্সেল এ সেটি ইনপুট করে রাখতে পারবেন এবং এই ক্যালেন্ডার ফিচার ব্যবহার করেই অনেক বড় বড় কোম্পানি তাদের কাজের সিডিউল করে থাকে।

মাইক্রোসফট এক্সেল এর বিভিন্ন ফিচার

অসংখ্য সব ফিচারে ভরপুর মাইক্রোসফটের এক্সেল অ্যাপ্লিকেশনটি। সেগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুল ব্যবহৃত কিছু ফিচার নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ

মাইক্রোসফট এক্সেল এর বিভিন্ন ফিচার
মাইক্রোসফট এক্সেল এর বিভিন্ন ফিচার [Image Source: wallstreetmojo]

১। স্প্রেডশিট (Spreadsheet)

মাইক্রোসফট এক্সেল ওপেন করার পর ঘর করা যে পৃষ্ঠাটি আমরা দেখতে পাই সেটি হল মাইক্রোসফটে এক্সেলের স্প্রেডশিট। এক্সেলের এই স্প্রেডশিটে আলফাবেটিক এবং নিউমেরিক্যাল বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ করা যায় এবং গাণিতিক বিশ্লেষণ করা যায়।

২। ওয়ার্কশিট (Worksheet)

এক্সেল এর সুবিসিয়াল স্প্রেডশিটের যে অংশে কাজ করা হয় মূলত ওই অংশকেই ওয়ার্ক সিট বলা হয়। একটি এক্সেল ফাইলে একাধিক ওয়ার্কশীট খুলে তাতে বিভিন্ন রকমের ডাটা রাখা যায় এবং সেগুলো নিয়ে পরবর্তীতে কাজ করা যায়।

৩। ওয়ার্কবুক (Work Book)

মাইক্রোসফট এক্সেল এ কাজ করার পর তা ভবিষ্যতে ব্যবহার করার জন্য একটি নির্দিষ্ট নামে সংরক্ষণ করতে হয়। সংরক্ষিত এই ফাইল বা স্প্রেডশিটটিকেই ওয়ার্কবুক বলা হয়। একটি ওয়ার্কবুক অনেকগুলো ওয়ার্কশিট থাকতে পারে।

৪। সেল (Cell)

ওয়ার্কশীটটি সারি এবং কলামে বিভক্ত হয়ে থাকে। এক্সেল স্প্রেডশীটের উপরের দিকে A, B, C, D………..ইত্যাদি বর্ণ দ্বারা কলামের নাম বুঝানো হয় এবং বাম পাশের 1,2,3,4,5……….. ইত্যাদি দ্বারা সারির সংখ্যা বুঝানো হয়। এই সারি এবং কলাম যখন পরস্পরকে ছেদ করে তখন যে ছোট ছোট আয়তাকার ঘর তৈরি হয় সেগুলোকেই সেল (Cell) বলা হয়।

৫। টাইটেল বার (Title Bar)

মাইক্রোসফট এক্সেল ফাইল এর একদম উপরের অংশকে বা বারটিকে টাইটেল বার বলা হয়। কোন একটি ফাইলকে যে নামে সেভ করা হয় পরবর্তীতে ঐ ফাইল ওপেন করলে সেভ কৃত নামটি টাইটেল বারে প্রদর্শিত হয়। টাইটেল বার এর ডান পাশে বিভিন্ন বাটন থাকে। যেমনঃ মিনিমাইজ, ম্যাক্সিমাইজ ইত্যাদি।

৬। মেনুবার (Menu Bar)

মাইক্রোসফট এক্সেল এ টাইটেল বারের ঠিক নিচে যে বারে File, Edit, View, Insert, Format, Data, Window, Help ইত্যাদি লেখা থাকে তাকেই মেনু বার বলা হয়। মেনু বারের প্রত্যেকটি অপশনের নিচে আন্ডারলাইন করা অক্ষরগুলো নিজেই এক একটি মেনু। এই মেনু গুলোকে চাইলে কিবোর্ড এর শর্টকাট কমান্ড দিয়েও ওপেন করা যায়। যেমন ফাইল মেনু ওপেন করতে চাইলে কিবোর্ড এর Alt+F বাটন একসাথে চাপতে হয়।

৭। টুল বার (Tool Bar)

মেনু বারের নিচে একটি বারে কয়েকটি প্রতীক বা আইকন দেয়া থাকে। এই বারটিকেই বলা হয় টুল বার। মেনু বারের মেনু সিলেক্ট করে কাজ করার যে টুল বারের টুলস ব্যবহার করে  তুলনামূলক খুব দ্রুত কাজ করা যায়।

৮। ফরমেটিং টুল বার (Formatting Tool Bar)

টুল বারের ঠিক নিচের সারিতে রয়েছে ফরমেটিং টুল বার। ফরমেটিং টুলবারের বাটনগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এই বাটনগুলো ফন্ট পরিবর্তন, ফন্টের সাইজ ছোট বড় করা, লেখাকে বোল্ড ও ইটালিক করা, লেখা অ্যালাইনমেন্ট করা, আউটলাইন দেওয়া ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়।

৯। ফর্মুলা বার (Formula Bar)

ফরমেটিং টুলবারের নিচে একটিবার রয়েছে যা লম্বা দুটি অংশে বিভক্ত। এই বাটিকে ফর্মুলা বার বলে। ফর্মুলা বারের প্রথম অংশকে Name Box বলা হয় যেখানে সেল এড্রেস প্রদর্শিত হয়। Name Box এ যেকোন সেল এড্রেস লিখে এন্টার চাপলে সরাসরি ঐ সেল এ নিয়ে যায়।

১০। ভার্টিক্যাল ও হরিজন্টাল স্ক্রলবার (Vertical and Horizontal Scroll Bar)

যেহেতু মাইক্রোসফট এক্সেল এর স্প্রেডশিট অনেক বড় তাই বড় কোন ডকুমেন্টে কাজ করার সময় পর্দায় সম্পূর্ণটা দেখা যায় না। সে ক্ষেত্রে ডকুমেন্টের যে কোন অংশ দ্রুত প্রদর্শনের জন্য ডানে, বামে, উপরে অথবা নিচের দিকে সরানোর প্রয়োজন পড়ে। এর সুবিধার্থে এক্সেল স্প্রেডশিটের ডানদিকে ভার্টিক্যাল স্ক্রলবার এবং নিচে হরিজনটাল স্ক্রলভার রয়েছে। স্ক্রলবারে মাউসের পয়েন্টার দিয়ে ক্লিক করে ডানে, বামে অথবা উপরে নিচে স্ক্রল করে ইচ্ছেমত দেখা যায়। অথবা, CTRL + SHIFT + Scroll চেপে খুব সহজেই ডানে বা বামে স্ক্রল করতে পারবেন।

১১। স্ট্যাটাস বার (Status Bar)

মাইক্রোসফট এক্সেলের ওয়ার্কবুক উইন্ডোর একদম নিচে টাস্ক বারের উপরের বারকে স্ট্যাটাস বার বলা হয়। এইবারে ডকুমেন্ট টি কোন অবস্থায় রয়েছে (অন অথবা অফ) তা প্রদর্শিত হয়। স্ট্যাটাস বারের বাম পাশে “Ready” লেখা থাকলে বুঝতে হবে Carsor সেল এর মধ্যে রয়েছে এবং তা কাজ করার জন্য প্রস্তুত। কোন সেল এর লেখা এডিট করার সময় “Ready” এর জায়গায় “Edit” লেখা দেখাবে এবং এডিট করা শেষ হয়ে গেলে পুনরায় “Ready” লেখা প্রদর্শিত হবে।

১২। শীট ট্যাব (Sheet Tab)

এক্সেল এর ওয়ার্কবুক উইন্ডোর নিচে বাম দিকে সিট ট্যাব রয়েছে যার মধ্যে সাধারণত তিনটি ওয়ার্কশীট থাকে। যেমনঃ Sheet 1, Sheet 2, Sheet 3…। এই ট্যাবে ইনসার্ট মেনু ক্লিক করে প্রয়োজন অনুসারে নতুন শীট ওপেন করা যায়।

কেন শিখবেন মাইক্রোসফট এক্সেল এর কাজ?

ব্যক্তি জীবন, সাংসারিক জীবন অথবা কর্মজীবন সব ক্ষেত্রেই আমাদের হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন হয়। এই হিসাব-নিকাশ এর জন্য আগে আমরা খাতা ব্যবহার করতাম যা ছিল সময় সাপেক্ষ এবং ভুল ত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল বেশি। আর এই কাজকে সহজ করে দিচ্ছে মাইক্রোসফট এক্সেল। যেই হিসাব নিকাশ করতে আগে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় লাগতো, এক্সেল এর সাহায্যে ঐ হিসাব-নিকাশ কয়েক ক্লিকেই আরও নিখুঁতভাবে করা যাচ্ছে।

 আর যদি অফিসের কাজকর্মের কথা বলেন সে ক্ষেত্রে এক্সেলের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। প্রফেশনাল লাইফে এক্সেল কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। এক্সেল জানা থাকলে কর্ম ক্ষেত্রে আপনি বিশাল সুবিধা পাবেন পাশাপাশি দ্রুত পদোন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মাইক্রোসফট এক্সেলের উপর ভালো ভাবে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে কর্ম ক্ষেত্রে সবার থেকে আপনি একধাপ এগিয়ে থাকবেন। এক্সেলে দক্ষতা অর্জন করলে আপনি যে সুবিধা গুলো পাবেন সেগুলো হলোঃ

১। কর্মক্ষেত্রের বিশেষ সুবিধা

আপনি যদি নিজেকে একজন excel এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন তাহলে কর্ম ক্ষেত্রে অফিসের প্রায় প্রতিটা কাজেই এর ব্যবহার করতে পারবেন। যার ফলে আপনি সবসময়ই অন্যদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে থাকবেন এমন অন্য সবার তুলনায় একটু বেশি সুবিধা পাবেন। একজন বিজ্ঞানী শিক্ষক ব্যবসায়ী অথবা গ্রাফিক্স ডিজাইনার সবাইকেই কম বেশি এক্সেলের কাজ জানতে হয়। আর সেখানে আপনি যদি নিজেকে মাইক্রোসফট এক্সেল এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন তাহলে তা হবে আপনার জন্য একটি প্লাস পয়েন্ট।

২। দ্রুত পদোন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা

আপনি যদি একটু ভালোভাবে রিসার্চ করেন তাহলেই দেখবেন যে, বর্তমানে সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রেই যে অভিজ্ঞতা চাওয়া হয় তার মধ্যে এক্সেল হলো অন্যতম। যেহেতু এখন প্রায় সব ক্ষেত্রেই এক্সেল এর ব্যবহার শুরু হচ্ছে তাই নিয়োগকর্তারা এমন কর্মী নিয়োগ দিতে চান যারা এক্সেল সম্পর্কে অভিজ্ঞ। তাই আপনি যদি মাইক্রোসফট এক্সেল এ দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনি কোম্পানির সম্পদে পরিণত হবেন। ফলে কোম্পানিতে আপনার পদোন্নতি তথা বেতন বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।

৩। নির্ভুল এবং দ্রুততার সাথে কাজ করা যায়

অল্প সময়ে কিন্তু নির্ভুলভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে মাইক্রোসফট এক্সেল এর বিকল্প নেই। এমন অনেক কাজ রয়েছে যা আপনি ম্যানুয়ালি করতে গেলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিন্তু এক্সেল ব্যবহার করে ঐ কাজটিই আপনি খুব অল্প সময়ে শেষ করতে পারবেন

৪। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজের সুযোগ

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে মাইক্রোসফট এক্সেল সম্পর্কিত ডাটা এন্ট্রি, ডাটা এনালাইসিস, ডাটা স্টোরিং ইত্যাদি অনেক কাজে রয়েছে। এক্সেল এ দক্ষতা অর্জন করে আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেসেও এসব কাজ করে একটি ভালো পেসিভ ইনকাম করতে পারেন।

কিভাবে শিখবেন মাইক্রোসফট এক্সেল এর কাজ?

মাইক্রোসফট এক্সেল কি এবং কেন এক্সেল এর কাজ শিখা এতটা গুরুত্বপূর্ণ আশা করি তা এতক্ষণে বুঝার বাকি নেই। এখন প্রশ্ন হল কিভাবে শিখব মাইক্রোসফট এক্সেল এর কাজ?

তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সবকিছুই আপনার হাতের মুঠোয়। আপনি চাইলে ঘরে বসেই ইউটিউব এবং গুগল ব্যবহার করে মাইক্রোসফট এক্সেল এর বেসিক কাজগুলো অনায়াসেই শিখতে পারবেন। বেসিক কাজগুলো শিখতে আপনাকে কোন প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু প্রফেশনাল ভাবে এক্সেল এর উপর দক্ষতা অর্জন করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই কোন ভালো প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে অথবা আপনি চাইলে অনলাইন থেকে বিশ্বস্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের কোর্স কিনেও মাইক্রোসফট এক্সেল এর এডভান্স লেভেলের কাজগুলো শিখতে পারেন।

শেষ কথা

আজকের পোস্টে Microsoft Excel কি এবং এর কাজ কি, মাইক্রোসফট এক্সেল এর বিভিন্ন ফিচার, কেন এবং কিভাবে শিখবেন মাইক্রোসফট এক্সেল এর কাজ? এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না এবং মাইক্রোসফট এক্সেল নিয়ে যেকোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন কমেন্ট বক্সে।মাইক্রোসফট এক্সেল এর আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফর্মুলা, সূত্র, এবং ফিচার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে অন্য কোন পোস্টে। সেই পর্যন্ত সাথেই থাকুন।

এই ওয়েবসাইটের সকল কন্টেন্ট (ছবি, লেখা ইত্যাদি) অন্য কোথাও কপি করে বা পরিবর্তন করে পাবলিশ করার আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। যদি কেউ এমন অপরাধমূলক কাজ করেন তাহলে DMCA পাঠানো সহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।



Leave a Reply